শতবর্ষে কোনো জাতির ভাগ্যে সত্যিকার পরিবর্তনের সুযোগ একবারই আসে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বাংলাদেশে এবারই এমন এক ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। এই সুযোগের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ইঞ্চি ভূমিকে আপনি যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেন এবং অবশ্যই আপনাকে তা করতে হবে।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ছোট দলগুলোর বিভ্রান্তিকর বক্তব্য, টকশো ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্চারিত নানা মতাদর্শ ও জটিল মতামতের ফাঁদে না পড়ে ভবিষ্যতের সুস্পষ্ট কর্মপন্থা নির্ধারণে মনোনিবেশ করুন।
শহরের কিছু বেকার উচ্চাভিলাষী নাগরিক ব্যক্তিগত স্বার্থে জনতার নামে রাজনীতি, প্রতারণা ও দ্বিচারিতার আশ্রয় নিয়ে মাঠে-ময়দানে চিৎকার করছে—এই চিত্র আমাদের নতুন নয়। ইতিহাস বলছে, এমন গোষ্ঠীর কথায় কান দিয়ে বহু সৎ মানুষ পথভ্রষ্ট হয়েছে, এমনকি দুর্নীতিগ্রস্তও হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ এখন নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতদুষ্ট—সব ধরণের নির্বাচন ও তার ফলাফল সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তারা জানে ভোটে কী হয় এবং কে কী করে।
তাই আপনি, এসব থোড়াই কেয়ার করে, আপনার শেষ রক্তবিন্দু, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার আলোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশল নির্ধারণ করুন।
আইনি পরামর্শ ও সর্বোচ্চ আদালতের রেফারেন্স গ্রহণ করে—যেমন রেফারেন্সের ভিত্তিতেই বর্তমান সরকার গঠিত হয়েছে—বিচার করুন, জনগণের মত যাচাইয়ে গণভোট বা রেফারেন্ডাম আয়োজন সম্ভব কি না। “হ্যাঁ” বা “না” ভোটের মাধ্যমে জনগণ আদৌ আপনাকে চায় কি না, সে বিষয়ে একটি গণতান্ত্রিক রায় নির্ধারিত হোক।
কারণ, জনগণের অভিপ্রায়ই হচ্ছে সংবিধানের মূল শক্তি। আমরা, সচেতন নাগরিক সমাজ বিশ্বাস করি, এই অভিপ্রায়কে বাস্তবায়নে প্রচলিত কোনো আইন বাধা হতে পারে না—যেহেতু একটি বৈধ সরকার জনগণের সম্মতির ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হয়।
আপনার সরকারের ইতিবাচক দিকগুলো :
- দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান অগ্রগতি
- আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির উন্নয়ন
- ব্যাংক ও আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা
- অফিস-আদালতের কাঠামোগত পরিবর্তন ও গতিশীলতা
- বিনিয়োগে নতুন দিগন্তের উন্মোচন
- রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি
- একাধিক বিদেশি দূতাবাসের অফিস স্থাপন
- আমিরাতে বাংলাদেশি বন্দীদের মুক্তি
- আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির উজ্জ্বলতা
- তিস্তা প্রকল্পসহ চীনের বিপুল বিনিয়োগ
- আসিয়ান অন্তর্ভুক্তির প্রস্তুতি ও কূটনৈতিক তৎপরতা
- পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার পদক্ষেপ
- লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা
- জাতিসংঘের গণহত্যা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ প্রকাশ
- ইলন মাস্কের স্টারলিংক চালুর সম্ভাব্য কার্যক্রম
- এবং সর্বোপরি, ভারত ব্যতীত প্রায় সকল প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সমর্থন
মাত্র সাড়ে সাত মাসে শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আপনার সরকারের এই অর্জন নিঃসন্দেহে অতীতের ব্যর্থ সরকারগুলোর কাছে ঈর্ষণীয়। বিশেষ করে বিগত স্বৈরশাসক হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের দুঃশাসনের পর, ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে আপনি যা করেছেন, তা জনগণের দৃষ্টিতে অকল্পনীয় সাফল্য।
তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস—আপনার উপদেষ্টা পরিষদ আরও দক্ষ, মেধাবী ও অভিজ্ঞ হলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হতো এবং অহেতুক সমালোচনার জায়গাও সংকুচিত হতো।
আমরা তাই উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্বিন্যাস ও যোগ্য নেতৃত্বে পুনর্গঠনের দাবি জানাই।
বিনীত,
মোঃ আসাদুজ্জামান
আহ্বায়ক – কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ (একটি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম)
এবং
সাবেক কর কমিশনার

Latest Videos